সাধারণ অর্থে, কোন বতুর নির্ধারিত মূল্য অপেক্ষা কম মূল্যে ক্রয় সম্ভব হলে, যতটুকু মূল্য কম পরিশোধ করা হলো, তা-ই বাট্টা। ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে এই বাট্টা দেওয়া ও পাওয়া উভয়ই হয়ে থাকে।
বিক্রেতা পণ্যের বিক্রয়মূল্য নির্ধারণ করে। বিক্রয় বৃদ্ধির জন্য বিক্রেতা যখন পূর্বনির্ধারিত বিক্রয়মূল্য অপেক্ষা কম মূল্যে পণ্য বিক্রয় করে, তা কারবারি বাট্টা হিসেবে গণ্য করা হয়। এই কারবারি বাট্টা বিক্রেতার জন্য বিক্রয় বাট্টা এবং ক্রেতার জন্য ক্রয় বাট্টা। ক্রেতা বা বিক্রেতা কেউই এই বাট্টার হিসাব রাখে না। প্রকৃত যে মূল্যে ক্রয়- বিক্রয় হয়েছে, তা-ই হিসাবে লিপিবদ্ধ করা হয় ৷
ব্যবসায়ের ক্রয়- বিক্রয় প্রায়ই বাকিতে সংঘটিত হয়। ক্রেতা-বিক্রেতার মাঝে দেনা-পাওনার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিক্রেতা ক্রেতাকে যে টাকা ছাড় দেয় তাই নগদ বাট্টা। এই বাট্টা বিক্রেতার জন্য প্রদত্ত বাট্টা এবং ক্রেতার জন্য প্রাপ্ত বাট্টা। উভয় পক্ষ তাদের হিসাবের বইতে এই বাট্টা লিপিবদ্ধ করে।
উদাহরণ—১
জনাব নীলা চৌধুরী “নীলা এন্টারপ্রাইজ”-এর মালিক। ২০১৭ সালের মার্চ মাসে তাঁর ব্যবসায়ের কতিপয় লেনদেন ছিল নিম্নরূপ:
মার্চ ১ পণ্য ক্রয় ৯,০০০ টাকা ।
মার্চ ২ আসবাবপত্র ক্রয় ১২,০০০ টাকা।
মার্চ ৩ বাহারের নিকট বিক্রয় ১৫,০০০ টাকা।
মার্চ ৭ ব্যাংকে জমা দান ৮,০০০ টাকা ।
মার্চ ৯ বাকিতে পণ্য ক্রয় ৫,০০০ টাকা ।
মার্চ ১২ কুঋণ সঞ্চিতি ধার্য করা হলো ২,০০০ টাকা।
মার্চ ১৫ কুঋণ হিসেবে অবলোপন করা হলো ১,০০০ টাকা ।
মার্চ ১৮ মনিহারি দ্রব্যাদি ক্রয় ১,০০০ টাকা ।
মার্চ ৩০ কর্মচারীদের বেতন প্রদান ৭,০০০ টাকা ।
উদাহরণ-২
জনাব শওকত ২০১৭ সালের ১ জুলাই তারিখে নগদ ৫০,০০০ টাকা এবং ২০,০০০ টাকার পণ্য দ্রব্য নিয়ে শওকত ট্রেডার্স নামে ব্যবসায় শুরু করলেন। উক্ত মাসে তাঁর ব্যবসায়ের অন্যান্য লেনদেন ছিল নিম্নরূপ :
জুলাই ২ জনতা ব্যাংকে হিসাব খোলা হলো ২০,০০০ টাকা ।
জুলাই ৭ ব্যবসায়ের জন্য কম্পিউটার ক্রয় ২২,০০০ টাকা ।
জুলাই ৯ রুমি স্টোর্সের নিকট বিক্রয় বাবদ চেক প্রাপ্তি ১০,০০০ টাকা ৷
জুলাই ১০ বাবুল ট্রেডার্সের নিকট হতে ১০% বাট্টায় ক্রয় ১৫,০০০ টাকা ।
জুলাই ১২ অফিসের ভাড়া অগ্রিম পরিশোধ ৪,০০০ টাকা ৷
জুলাই ১৫ বাবুল ট্রেডার্সের নিকট পণ্য ফেরত পাঠানো হলো ১,০০০ টাকা (বাট্টা বাদে)।
জুলাই ২০ ব্যবসায়ের প্রচারণা বাবদ ব্যয় ৩,০০০ টাকা ৷
জুলাই ২৩ বাবুল ট্রেডার্সকে চেক প্রদান ৫,০০০ টাকা ।
জুলাই ২৫ জনাব শওকতের ব্যক্তিগত খরচ ব্যবসায় হতে পরিশোধ ২,০০০ টাকা ৷
জুলাই ৩০ কর্মচারী রায়হানের বেতন অপরিশোধিত রয়েছে ৩,৫০০ টাকা।
জনাব পীযূষ কুমার ২০১৭ সালের ১ মার্চ ঢাকার বেইলী রোডে “কুমার থিয়েটার” নামে ব্যবসায় শুরু করেন । ১ মার্চ তারিখে ব্যবসায়ে তিনি ৫,০০,০০০ টাকা বিনিয়োগ করেন। মার্চ মাসে তার ব্যবসায়ের লেনদেনসমূহ ছিল নিম্নরূপ :
মার্চ ২ থিয়েটারের ৩ মাসের ভাড়া অগ্রিম পরিশোধ ৯০,০০০ টাকা।
মার্চ ৪ থিয়েটারের প্রচারণা বাবদ ব্যয় ১৫,০০০ টাকা ।
মার্চ ৬ থিয়েটারের জন্য চেয়ার, টেবিল ক্রয় ৩০,০০০ টাকা ।
মার্চ ৭ মঞ্চ নির্মাণ ও সাজসজ্জা বাবদ ব্যয় ৫০,০০০ টাকা ।
মার্চ ১২ শিল্পী ও কলাকুশলীদের আপ্যায়ন খরচ ২,০০০ টাকা ।
মার্চ ১৫ থিয়েটারে নাটক প্রদর্শনের টিকেট বিক্রয় ৮০,০০০ টাকা ।
মার্চ ১৮ শিল্পীদের সম্মানী প্রদান ২৫,০০০ টাকা ।
মার্চ ২৫ ইলেকট্রিক বিল পাওয়া গেল ৩,০০০ টাকা ।
মার্চ ২৮ থিয়েটার কর্মীদের বেতন প্রদান ১২,০০০ টাকা ।
আরও দেখুন...